Home || About Us || History || Biography of Ayub Ali Gazi
আয়ুব আলী গাজী-এর সংক্ষিপ্ত জীবন ইতিহাস
জন্ম ও পারিবারিক বর্ণনাঃ মোঃ আয়ুব আলী গাজী খুলনা জেলার পাইকগাছা থানাধীন
গড়ইখালী গ্রামে ১৯৪৭ সালে ৫ই জুলাই জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আলহাজ্ব মোঃ শহর
আলী গাজী। ১১ ভাইবোনের মধ্যে আয়ুব আলী গাজী ৪র্থ। আয়ুব আলী গাজী ০২-০৬-১৯৬৫ তারিখে
বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তান রেখে যান। তার কন্যা
সন্তানদের নাম হলো- (১) সোহেলা পারভীন (রুনা), (২) আইরিন পারভীন (দিনা) ও (৩) নাজনিন
পারভীন (কনা)। তিন কন্যার সবাই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসার ধর্ম পালন করছে।
শিক্ষাঃ মোঃ আয়ুব আলী গাজী গড়ইখালীতে তার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপন করে খুলনা
শহরের মডেল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬২ সালে এ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পাশ
করেন। পরবর্তীতে তিনি খুলনা আযম খান কমার্স কলেজে আই.কম-এ ভর্তি হন। ১৯৬৪ সালে আয়ম
খান কমার্স কলেজ থেকে আই.কম পাশ করেন।
কর্মময় জীবনঃ মোঃ আয়ুব আলী গাজী আই.কম পাশ করে খুলনাস্থ তার পিতার ‘স’ মিল,
কাঠের ও গোলপাতার ব্যবসা পরিচালনা করতেন। এ ছাড়া খুলনা নিউজ প্রিন্ট মিলে নিউজ প্রিন্ট
প্যাকিং বক্সের সাইজ তক্তা-কাঠ-সরবরাহ-এর ব্যবসা করতেন। এ ছাড়াও তার পিতার জমাজমি ও
ঘের ইত্যাদির সার্বিক দায়িত্ব তার উপর ন্যাস্ত ছিল। তিনি গোটা পরিবার দেখাশুনাসহ
পারিবারিক সকল ব্যবসার দায়িত্ব পালন করতেন।
রাজনীতিঃ আয়ুব আলী গাজী স্কুল জীবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি আওয়ামী
লীগের একজন নিবেদিত কর্মী ছিলেন। তিনি খুলনাস্থ আইচগাতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কমিটির একজন
সদস্য ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সকল প্রকার প্রচার-প্রচারনা ও জনসভার প্রথমসারির একজন
কর্মী ছিলেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধঃ স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি খুলনাস্থ তার পারিবারিক বাড়ী
থেকে খুলনার দক্ষিণাঞ্চলে চলে যান। তার বড়ভাই লেঃ মোঃ রহমতউল্ল্যা, বিএন(অবঃ), বীর প্রতীক,
ফ্রান্স থেকে ভারত হয়ে দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে তিনি তার সাহচার্যে এসে প্রশিক্ষণ
গ্রহণ করেন। তিনি তার বড় ভাইয়ের সাথে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে দাকোপ
থানার গুনরীতে অস্ত্র সহ তাকে গ্রেফতার করে হত্যা করা হয়। শহীদ মোঃ আয়ুব আলী গাজীর
লাশ অনেক চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তার এ মর্মান্তিক মৃত্যুতে তার পরিবার সহ সবাই শোকাহত
ও মর্মাহত হন। মু্ক্তিযোদ্ধা হিসাবে চুড়ান্ত লাল মুক্তিবার্তায় তার ক্রমিক নম্বর-০৪০২০৭০০৯৩
এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ গেজেট অনুযায়ী তার ক্রমিক নম্বর ১৯০১।
সখঃ তিনি ভ্রমন করতে খুব পছন্দ করতেন। তাছাড়া তিনি ভাল ফুটবল ও কার্ড খেলতে
পারতেন।
মৃত্যুঃ তার মৃত্যু হয় ১৯৭১ সালের ১০ই নভেম্বর। স্বাধীনতা যুদ্ধে নিবেদিত এ
মহান ব্যক্তির স্বাধীনতার সুখ, আনন্দ ভোগ বা দেখার সৌভাগ্য হয়নি। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী
ও তিন কন্যা ও নাতি-নানতি ও তার অনেক গুনগ্রাহী ভক্ত রেখে গেছেন। জাতি আজও তার এ আত্মত্যাগের
কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।